এক বাঙালি ও তাঁর ১৫ই অগাস্ট।
- ইকবাল হোসেন বাল্মীকি - তোমার বেদীতে গোলাপ রাখি রক্ত রাঙা হাতে।প্রকাশের পথে। ১৯-০৫-২০২৪

------------------------------------
০১
আমি কোনদিন পিঁপড়া কে পিপীলিকা ছাড়া পিঁপড়া বলিনি
ইতরতা এবং ভদ্রতার মাঝে সুক্ষ্য সীমারেখা মেনে আসছি, অন্তপ্রান হয়ে
সুতরাং স্ত্রী ধন আমার গৃহে পিতার সম্রাজ্য বসিয়েছেন, আমি অভিবাসী

আজ কয়েক হাজার পিঁপড়া মেরেছি পায়ে দলে
বউ কে বলেছি ‘বজ্জাত মেয়েলোক- বদের হাড়----- ইত্যাদি

পিঁপড়া্রা নাকি বঙ্গবন্ধুর রক্ত খেয়ে ছিল
বউ টা কেন এই দিন একটা কালো শাড়ী পরতে পারেনা
----------------------------------
০২
আগস্ট এলেই দোয়েলের দরবার খুলে মাতবোর কবি কথা বলে
আসরে মধ্য মনি নীল মাছরাঙ্গা পোদ্ধার ছুড়ই ,চোর টোনটুনি
টীয়ার গায়ের রং হয় গিয়ালী, বুলবুলির লেজ হয় সাদা
ফেছকুন্দাও পাখিত্বের দাবি নিয়ে সুগন্দায় স্মারকলিপি পাঠায়।

হালার ক্ষমতার মমতায় চোখ নষ্ট রাতে, ডিনার পার্টিতে মোসতাক।
আলী বরদী খাঁ সিরজা কে চোখ মারেন। হালায় এইতো সোনার বাংলা।

--------------------------------------------
০৩
এই আগস্ট মাসে ফোরাত মুখে করে এনেছিল কারবালা ধানমণ্ডিতে
শীতলক্ষার পাশে বসে ‘শাতিল আরব’ বলেছিল এইতো গল্পের শুরু
সাখিনার পাথর চোখ হাসিনার বুকে বানায় পেরেক আলপনা
জয়নাল আবেদিন হয়ার মতো কেউ তখন বেঁচে নেই বাংলাদেশে।

জামাল কামাল বানিয়েছিল সাদ্দাদের বেহেস্ত, তাই খুন করে মেজর----
রুজির টাঙ্কে ছিল ছয়টা শাড়ী আর কামালের তিনটা টাউজার।

--------------------------------------------
০৪।
আমার দাদাজান ছিলেন কাঠমেস্‌তরি
হাঁতুড়া বাটালী নিয়ে কাজ কারবার
বিশেষত নৌকা বানানো ছিল জীবিকার পথ।

একজন কায়িক শ্রমিক, কাঠাল ছিল প্রিয় ফল
শোষকের লেশ মাত্র উপাধি ছিলন না বংশ পদবীতে ।

তিনি তাঁর বিবি কে একদিন ভোরে আদর করে বললেন-
বাক্স থেকে আমার সাদা পাঞ্জাবী হজ্বের গামছা বের করো
ধোইয়ে দাও বাটার প্লাস্টিকের জোতা জোড়া।

দাদী বললেন – ছদরী খাওয়ার দাওত বুঝি?
দাদা বললেন – দূর বান্দি, আজ ঠাকুর বাড়ির মাটে শেখ সাবের মিটিং
----------শেখ সাব মানে আউতরা বাটাইল
----------শেখ সাব মানে দরফই নাওয়ের গলই
----------শেখ সাব মানে উজানের বান, ধানের চালান
এই শেখ আইজ ভাষণ দিবেন ছয় দফায় জমিনের খাজনা মৌকুফ।

মেজরেরা যখন শেখ সাব কে গূলি করে, দাদুজানের স্ট্রোক হলো উর্দং হলো
তিনি আর কোনোদিন তক্তায় পাতাম গেঁথে নৌকায় তোলেন নাই রঙিন বাদাম।

--------------------------------------------
০৫।
ইংরেজের দেশে থাকি তাই
তাদের দু-একটা প্রবাদ বাক্য খুব মনে ধরে-
‘কাউকে ধ্বংসের আগে তাঁর বদনাম রটাও’

তাই তো-
-------কামাল ছিল ভুট্রোর ছেলে
-------জামাল ছিল পাকিস্থানী দালাল
-------রাসেল ছিল ভবিষ্যৎ সদরে পাকিস্থান
বেগম মুজিব ছিলেন উজিরস্থানের মোল্লাদের মাতা
রুজী জামাল ছিলেন সিতারে পাকিস্তানের বুলবুলি
সুলতানা কামাল ছিলেন ‘আল হেলাল’ কামান মিসাইল।

মুজিব আগামি কাল ভোরে
ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে পাকিস্থান ঘোষণা দিবেন
পাকিস্থান হবে ‘ দ্যা কিংডম অব শেখ মুজিবিস্থান”।

তাই তো বাংলার শেষ নবাব মনসুরে মুলুক মুস্তাক আলী খাঁ
মুক্তিযোদ্ধা অফিসার দের আদেশ দিলেন খতম করো------।

তারা ঘাতকে পরিণত হলো-
--------হত্যা করল সম্রাট শশাঙ্ক কে
--------হত্যা করল দাদা ভাই, তীতুমির কে
--------হত্যা করল প্রিয়বাসী চিত্তরঞ্জন দাস কে
--------হত্যা করল সুর্যসেন, ক্ষুদিরাম বসু, প্রিতলতা কে
--------হত্যা করল দুই লক্ষ মায়ের ইজ্জত আর প্রেম কে
--------হত্যা করল ত্রিশ লাখ শহিদের জান মাল আব্রুকে
--------হত্যা করল এক হাজার বছরের সাধনা স্বাধীনতার পায়রা টী কে

তারপর তারা একে একে শহীদ মিনারের ইট খুলতে লেগে গেল। ঢাক বাজিয়ে।
চীন মার্কিন সৌদীর স্নেহের হাত তাদের গালে সূর্য সন্তান বলে আদর করেছিল।

--------------------------------------------
০৬।
সচিব সাহেব, ১৫ আগস্টে কোথায় চিলেন?
- দস্তুর মতো কাইম কাজ করেছি। ভালো ছিলাম।
জেনারেল সাহেব , ১৫ আগস্টে কোথায় ছিলেন?
- বেনাপোলে ভারতীয় আগ্রাসন মোকাবেলা করেছি।
জাঁদরেল ছাত্রনেতা, ১৫ আগস্টে কোথায় ছিলেন?
- ভয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, ঘুম ভাঙ্গে একাশির পরে।
বীর মুক্তি যোদ্ধা, ১৫ আগস্টে কোথায় ছিলেন?
- অস্র ছিল কিন্ত ট্রেনিং টা জমা করে দিয়েছিলাম।
মস্কোপহ্নি কমরেড,১৫ আগস্টে কোথায় ছিলেন?
- সিগন্যাল পাইনি বলে ভারতে পালিয়ে ছিলাম।
জাতীয়া সমাজতন্ত্রী, ১৫ আগস্টে কোথায় ছিলেন?
-পাটের গোদামে আগুন জ্বেলে লাল স্বপন দেখচিলাম।

বেশ সন্তোষ জনক উত্তর, আনন্দ করুন, জাতির জনকের নামে শপত নিন
‘কাদেরীয়া’ বাহিনীর লোকজন ছাড়া, বাদবাকি মন্ত্রী সভায় যোগদান করুন

--------------------------------------------
০৭
দেখতে দেখতে আকাশ রং বদলালো
দেখতে দেখতে পট না কি পরিবর্তন হয়ে গেলো।

তোমার হত্যাকারীর বিচার হয়েছে শুনেছি
ফারুক রশিদের মরা লাশে জুতা মেরেছে জনতা।

আসলেও কি তোমার হত্যাকারির বিচার হয়েছে
হুকুম দাতা না হুকুম পালন কারি, কোথায় দণ্ডবিধি প্রবল।

----------------------------------------------
০৮।
তোমরা তাকে মেরে ফেলার যুক্তি দেখালে-
সর্বশেস ফেরাউন, মালাউন, আজাজিল খন্নাস।

তোমরা থাকে মেরে ফেলার পশ্চাতে স্বপ্ন দেখালে-
দুধে ভাত, মাছে কাপড়, জলে সম্রাজ্য আকাশে স্বাধীনতা।

আমাদের সমর্থন পেয়ে তোমরা তাকে খুন করলে-
-সেন্ডো গেঞ্জি পরা মামতামী পিতা
--ভাতের গন্ধে যার চোখ দেখবার মতো
---মানুষ টা গামছায় হাত মুছে হাসলে, বাংলাদেশ হাসতো।

তোমরা আমাদের-
দুধের মধ্য মাছি
--মাছের মধ্যে ফরমালীন
---জলের মধ্যে নৌকা ডুবি
----আর আকাশে আজরাইল এনেছ।

পার পেয়ে গেছো ভাবছো
অভিশাপ মেঘের আড়ালে আছে।
জলে আছে স্থলে আছে
ঠিক বুকের কড়ার নীচে
শক্ত হয়ে আছে – লানৎ তোমারদের উপর।
----------------------------------------------------------
০৯।
ও হাচু,হাচুরে নাম পাল্টি দিলে কেন
কেমন চালাইতে মজা জনতার ভ্যান।

এই পর্যন্ত ভালই করেছিস, আরেক টু কর
মানুষ গুলার মনে এনে দেয় সবর।
এরা কি চায়, হতে ইউরুপ অ্যামেরিকা?
মাগো ওদের বাঙ্গালিত্ব ভালো করে শিখা।

বাংলাদেশ মানে সুখ, পদ্মা মেঘানা যমুনার জল
বাংলাদেশ মানে আমি আর তোর মায়ের আঁচল।
----------------------------------
১০।
হাসুরে বাচ্চাদের মতো কেন্‌ করস,বল্‌ হল তোর কিতা
আমি তোর একার নই আমি ষোল কোটি মানুষের পিতা।

--------------------------------------------
১১।
এক দিন নায়ে ঘুমিয়ে চিলাম
গভীর রাতে নৌকা ডাকিল ডাকাত
নৌকা ভর্তি লোকে, জানে মোর নাম
আমার পশ্চাতে ১৪৪ ধারার কালোহাত।

জনৈক ডাকাত বলে -
হালার পুত মাঝি বলিস নাই কেন
এই নায়ে শেখ সাব আছে
শেখের নায়ে ডাকাতি করা
হুন মোগল পাঠানদের সাজে।

আমার ডাকতেরা আমায় ভালোবাসতো
সেই খুচরে পয়সা দেয়া ভিখারিনীর মতো
আমি বলেছি তাদের কথা পৃথিবীর কানে
এই বাংলার মাটি বায়ু জল সব জানে।
----------------------------------------------
১২।
আমার পিতার নাম লিখছ বাড়ির ভীমে
চৌকাটে ড্রেনে খাবার টেবিলে ছাদের কর্নিশে
তোমারা এত বোকা কেন?
এই বাড়ির প্রত্যেক ধুলোয় পিতা আছে মিশে।

যমুনা ব্রিজ দিয়ে দাও
নিয়ে নিক সলিমুল্লা কলিমুল্লা কিনে
আমার পিতা করে খেলা
আবাক শিশুর মতো যমুনা পুলিনে।

বঙ্গবন্ধু মাত্র নাকি এক স্টেডিয়ামের নাম
ভুলেও লিখনা এমন ভুতূড়ে কালাম
আমায় ভালোবাস কি না বাস, থাকো তোরা বেশ
আমি তোদের জম্ম ভুমি বাংলা,আমি তোদের স্বদেশ।
----------------------------------------
১৩।
সুবেহ সাদিক হয়ে এল
প্রিয় ঘাতক এসো বলী দাও
আমি এসেছি প্রেম দিতে
আমাকে আজ শূলেতে ছড়াও।

গূলি করোনা গুলির দাম জানো কত?
আমার দুখির একবেলা খাবারের মতো।

আমি হেসে হেসে যাব মৃত্যুপুরে
আমি শুধিয়াছি তোমাদের দেনা
আমার রক্তের যাবতিয় নুন
তোমাদের প্রেম দিয়ে কেনা।

শুধু তামুকের পাইপটা রেখো স্মৃতি করে
এটা সুখের চিহ্ন অনাগত নাতি পুতির ঘরে।
-------------------------------------
১৪।
ইতিহাস বসে রুদ্ধদ্বার রাজনীতির বৈঠকে
ইতিহাস দর্শন কে কোলে নিয়ে থাকে
ইতিহাস মাঝে মধ্যে শোষকের পক্ষে ছবি আঁকে
ইতিহাস অবশেষে তোমার পক্ষে দারুন ঝকঝকে।

কারন তুমি ক্রান্তিকালের ভুমিপুত্র জানে ইতিহাস
কারণ তুমি জাতির ভাগ্য স্বাধীনতার ভুমিদাস।
----------------------------------

১৫।
আমি জানতাম আমার মৃত্যু এই ভাবে হবে
আগামি দিনের কবি আমার পক্ষে কথা কবে।


(কাব্য- তোমার বেদীতে গোলাপ রাখি রক্ত রাঙা হাতে।প্রকাশের পথে। বাল্মীকি)

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।